Post Image

তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন

কিভাবে বুঝবেন আপনার তৈলাক্ত ত্বক? সকালে ঘুম থেকে উঠেই আপনার মুখের স্কিন হাত দিয়ে ধরুন ও আয়নায় দেখুন। তৈলাক্ত ত্বক বোঝার সবথেকে ভালো উপায় এটি। যদি পুরো মুখটা তেলতেলে লাগে, তবে বুঝবেন আপনার স্কিন টাইপ অয়েলি। মুখ ধোয়ার কিছু সময় পরেই আবার তৈলাক্ত হয়ে যাওয়া, এনলার্জ পোর বোঝা যাওয়া, চকচকে এবং পিচ্ছিল একটা ভাব থাকা এগুলোও অয়েলি স্কিনের বৈশিষ্ট্য। কিভাবে স্কিন কেয়ার করবেন? খুব সিম্পল ও বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করে তৈলাক্ত ত্বককে সুন্দর রাখা যায়৷ ১. ক্লিনজিং লো পি-এইচযুক্ত, নন কমেডোজেনিক (non-comedogenic) জেল বা ওয়াটার বেজড ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ক্লিন করুন। আমাদের যাদের স্কিন অয়েলি, তাদের বার বার মুখ ধোয়ার স্বভাব আছে। এতে ত্বকের উপরিভাগ ড্রাই ফিল হয় কিন্তু সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড (Sebasiase Gland) আরও সেবাম উৎপন্ন করে ব্যালেন্স আনার চেষ্টা করে। তাই ওভার ওয়াশ করবেন না। মর্নিং ও নাইট স্কিন কেয়ারে একবার করেই ক্লেনজিং করাই ভালো। ২. এক্সফোলিয়েশন অয়েলি স্কিনের জন্য সপ্তাহে দুইবার এক্সফোলিয়েট করা প্রয়োজন। একে তো ক্রমাগত সেবাম সিক্রেশন, তারপর ডেড সেল জমে গেলে স্কিনের কী অবস্থা হবে, নিশ্চয় বুঝতে পারছেন! ডার্ট, অয়েল, ব্ল্যাকহেডস, প্ল্যুশন এগুলো প্রোপারলি ক্লিন না করলে স্কিনে তো প্রবলেম হবেই। তাই প্রয়োজন অনুযায়ী সপ্তাহে এক অথবা দুইবার স্ক্রাবিং করবেন। ৩. আইস ম্যাসাজ পোর ক্লিন করার পাশাপাশি সেটা মিনিমাইজ করাটাও ভীষণ জরুরি। তাই সপ্তাহে তিন বা চার দিন মুখে আইস ম্যাসাজ করে নিন। তৈলাক্ত ত্বক ভালো রাখার জন্য এই সিম্পল স্টেপটি কিন্তু বেশ কার্যকরী। ৪. টোনিং অ্যালকোহল ফ্রি, ন্যাচারাল এক্সট্রাক্টযুক্ত বা অয়েলি স্কিনের জন্য বেনিফিসিয়াল উপাদান আছে, এমন টোনার আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে। টোনার স্কিনের পি এইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখে, তৈলাক্ততা কমাতে সাহায্য করে ও স্কিনকে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। তাই মুখ পরিষ্কার করার পর টোনিং করতে ভুলবেন না। ৫. ময়েশ্চারাইজিং এবার আসছে ময়েশ্চারাইজিং এর পালা। ম্যাট ফিনিশিং লুকের জন্য অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার নিতে হবে। ক্রিমি ও থিক ফর্মুলার ময়েশ্চারাইজার এড়িয়ে যাবেন। জেল বেসড প্রোডাক্ট বেছে নিন যাতে পোর ক্লগড না হয়ে যায়। অনেক কারনেই স্কিনের ময়েশ্চার লেভেল বা প্রটেকটিভ লেয়ার ড্যামেজ হয়ে যায়। আর তখনই অয়েল প্রোডাকশন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ঠিকঠাক ময়েশ্চারাইজার বেছে নেওয়া খুবই জরুরি! ৬. সান প্রোটেকশন সানস্ক্রিন সব ধরণের স্কিনের জন্যই মাস্ট। তবে অয়েলি ত্বকে ঘাম বেশি হয়, রোদে গেলে তাড়াতাড়ি অক্সিডাইজড হয়ে যায় ও কালচে দেখায়। স্কিন আরও বেশি তেলতেলে হয়ে যাবে, এই ভয়ে অনেকেই সানস্ক্রিন স্কিপ করেন বা এড়িয়ে চলেন! এতে কিন্তু আপনার স্কিনের ক্ষতিই বেশি হচ্ছে। জেল বেসড (Gel based), অয়েল ফ্রী, ম্যাটিফাই ইফেক্ট (Mattify effect) দেয় ও লাইট ওয়েট ফর্মুলার সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। ৭. তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে ফেইস মাস্ক বা প্যাক সাপ্তাহিক স্কিন কেয়ার রুটিনে ফেইস মাস্ক বা প্যাক রাখুন। রেডিমেড মাস্ক বা প্যাক ইউজ করতে চাইলে অয়েল কন্ট্রোল করবে এমন উপাদান আছে কি না সেটা দেখে নিন। যেমন- মুলতানি মাটি, অ্যাকটিভেটেড চারকোল (Activity charcoal), চন্দনের গুঁড়া, টি ট্রি অয়েল, গ্রিন টি ইত্যাদি। চাইলে বাসায় লেবু, শসা, চালের গুঁড়ো, বেসন, ডিমের সাদা অংশ ইত্যাদি দিয়ে ফেইস প্যাক বানিয়ে নিতে পারেন। এগুলো অয়েল কন্ট্রোলে খুব ভালো কাজ করে। ৮. সিরাম অ্যাপ্লাই আপনার বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিন যদি ঠিক থাকে তাহলে বিশ বছর বয়সের পর থেকে সিরাম অ্যাপ্লাই করতে পারেন। বিভিন্ন স্কিন প্রবলেমকে টার্গেট করে আলাদা আলাদা সিরাম সাজেস্ট করা হয়। যেমন- ত্বকের ফার্মনেস (Firmness) ঠিক রাখতে অ্যান্টি এজিং স্কিনকেয়ারে পেপটাইড সিরাম (Peptide Serum), রেটিনল (Retinol), অ্যাসকরবিক এসিড (Ascorbic acid) ভিটামিন সি ইত্যাদি ব্যবহার করা শুরু করতে পারেন। যাদের ওপেন পোরের প্রবলেম আছে তাদের জন্য নিয়াসিনামাইড (Niacinamide), ব্রণের সমস্যা থাকলে স্যালিসাইলিক এসিড (Salicylic acid) ইত্যাদি। তবে সপ্তাহে এক দিনই ইউজ করতে হবে এবং একই দিনে দুই বা ততোধিক সিরাম লাগানো যাবে না। সিরাম ইউজ করলে সান প্রোটেকশন কিন্তু মাস্ট কেননা এগুলো সেনসিটিভ।